Saturday 25 May 2013

সব চরিত্র কাল্পনিক

কেউ শুধু কোড লেখে,
কেউ গুঁড়ো করে,
কেউ বা অঙ্ক কষে
খাতা গুলো ভরে।

কেউ রোজ পাতা ছোঁড়ে,
বাঘ হাতি মেরে,
কেউ বা চেয়ারে বসে
চুল গুলো ছেঁড়ে।

কেউ করে ফেসবুক,
দিনের বেলায়,
কেউ বা দরিদ্র, সে
ফিলিম নামায়।

কেউ থাকে ক্যান্টিনে,
কেউ জল ভরে,
কেউ বা ছাত্রী পেলে
নিয়ে যায় ঘরে।

কেউ ভাবে আমি দেব,
কেউ বলে আমি,
কেউ বা বহুবচন,
হয় সর্বগামী।

দেখে শুনে ছড়া কেটে,
কইছে অতনু,
আমরা যে হক্কলে
বিজ্ঞানী হনু।

Thursday 23 May 2013

তোমার সঙ্গে

তোমার সঙ্গে একটুকু রাগ,
                তোমার সঙ্গে আড়ি;
তোমার সঙ্গে সময়টা কাটে
                 বড্ড তাড়াতাড়ি।

তোমার সঙ্গে গ্রীস্ম বর্ষা,
                 বাজল পুজোর ঢাক;
তোমার চোখের তারায় তারায়
                      বসন্ত দেয় ডাক।

তোমার সঙ্গে ডাল ভাত মাছ,
                    বিরিয়ানি মোগলাই;
তোমার সঙ্গে বলাইয়ের ধাবা,
                   কবিরাজি ফিশফ্রাই।

তোমার জন্য কবীর সুমন
                  সুরের সলিলে মেশে;
তোমার কন্ঠে রবি ঠাকুর,
                  চিরনতুনের বেশে।

তোমার সঙ্গে ফেলু ব্যোমকেশ,
                   চাঁদের পাহাড় ডাকে;
তোমার চোখেই প্রথম আলো,
                   বইয়ের থাকে থাকে।

তোমার কথায় রাত্রি ঘনায়,
                   এলো যে ঘুমের ঘোর;
তোমার জন্যে আনবোই দেখো
                   লাল টুকটুকে ভোর।

হঠাৎ কখন এলোমেলো মন,
                   ফেসবুকে আঁকিবুকি।
তোমার হাতটা ধরতে পেলেই
                     মনখারাপের ছুটি।

তোমাতেই হাসি, তোমাতেই কাঁদি,
                 তোমাতে সারাটা বেলা;
তোমাকে নিয়েই ভাসাবো এবার
                    তেঁতুলপাতার ভেলা।

প্রথম প্রকাশঃ চর্যাপদ

Wednesday 1 May 2013

কাসবের ভাই

Photo0540
ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস
ঠিক সাড়ে দশটায় দুরন্ত এসে দাঁড়ালো ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাসে। হাতে এখন বারো ঘন্টা সময়। রাত সাড়ে দশটায় আবার গোয়ার উদ্দেশ্যে গাড়ী ধরব। এই সময়টুকু মুম্বাইতেই কাটাতে হবে। এদিকে ঘাড়ে একটা জাম্বো ব্যাগ, দিনদশেকের সাজসরঞ্জাম। তাই প্রথমেই ক্লোক রুমে গিয়ে ভারমুক্ত হয়ে পিঠে একটা ব্যাগ নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়লাম। গন্তব্য আপাতত গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া। সেখান থেকে যাব এলিফ্যান্টা দ্বীপে। মুম্বাইয়ে বারো ঘন্টা কাটাতে হবে শুনে ইনস্টিটিউটের এক বন্ধু এই পরামর্শ দিয়েছিল, টিআইএফআর এ নিয়মিত যাতায়াতের সূত্রে সে বলতে গেলে বম্বে বিশারদ হয়ে গেছে।
Photo0543

 স্টেশন থেকে বেরিয়ে এক পুলিসকর্মীর কাছে পথনির্দেশ চাইতে তিনি বাসস্ট্যান্ডটা দেখিয়ে দিয়ে বললেন ওখানে দাঁড়াতে, এক্ষুনি বাস এসে যাবে। আমি যখন বললাম আমি হেঁটেই যেতে চাই, তিনি এমন ভাবে তাকালেন যেন এমন আহাম্মক তিনি জীবনে দেখেননি যে বাস থাকতে হেঁটে যেতে চায়। ভাবলাম তাঁকে বুঝিয়ে বলি আমার হাতে এখন অঢেল সময় আর গুগল ম্যাপে দেখে নিয়েছি গেটওয়ে অফ  ইন্ডিয়া সিএসটি থেকে খুব দূরে নয়। ফেলুদার সেই উপদেশটা, "কোন শহর ঘুরে দেখতে চাইলে হাঁটার চেয়ে ভালো কিছু হয়না", শুনিয়ে দেওয়া যায় কি না তাও ভাবছিলাম। কিন্তু আমার বিপুল হিন্দীজ্ঞানের কথা ভেবে আর সাহস পেলামনা। যাই হোক আমি নাছোড়বান্দা বুঝে তিনি রাস্তাটা দেখিয়ে দিলেন।
Photo0547
মহারাষ্ট্র পুলিস হেডকোয়ার্টার্সের সামনে কর্তব্যরত পুলিসকর্মীরা


বিন্দাস হাঁটতে লাগলাম, হাতে মোবাইল দিয়ে ফটাফট ছবি তুলছি। (মোবাইল আসার আগে কি জানতাম আমি এতবড় ফটোগ্রাফার!!) চারপাশের বাড়িগুলো সব যেন একই ধাঁচের। পরে জেনেছি একে বলে ভিক্টোরিয়ান আর্কিটেকচার। সেরকমই একটা বাড়ির সামনে কয়েকজন সাদা ইউনিফর্ম পরা পুলিস মোটরবাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমি ছবি তুলতেই তাঁরা শিরদাঁড়া টান করে সরু চোখ করে আমার আগাপাশতলা জরিপ করতে শুরু করলেন । ততক্ষণে আমিও দেখে নিয়েছি, বাড়িটার সামনে দেশ বড় করেই লেখা "মহারাষ্ট্র পুলিস হেডকোয়ার্টার্স"। বেশী কিছু না ভেবে সোজা ওনাদের দিকেই এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম, "গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া টা কোনদিকে?" কয়েক সেকেন্ড চুপ করে থেকে একজন তেড়িয়া হয়ে বললেন, "গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া তো ওইদিকে, এখানে দাঁড়িয়ে কিসের ছবি তুলছো?!!" আমি দাঁত বার করে ওনাদের ধন্যবাদ জানিয়ে এগিয়ে গেলাম।



Photo0552
গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া 


খানিকদূর গিয়ে পিছন ফিরে দেখি তখনো ওনারা আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমি কাসবের কোন ভাই কিনা, পরবর্তী কর্মসূচীর ছক কষার জন্য মুম্বাইয়ের ছবি তুলতে এসেছি কি না সে বিষয়ে বোধহয় তখনো নিঃসংশয় হতে পারেননি।
Photo0556
তাজ হোটেল

Photo0566
আরব সাগর থেকে মুম্বাই

Photo0788
মেরিন ড্রাইভ

Photo0794
মেরিন ড্রাইভ

Photo0795
নরিম্যান পয়েন্ট
প্রথম প্রকাশঃ চর্যাপদ